দানব বাঘাইড় বা বাঘাইর - The Goonch or Giant Devil Catfish
দানব বাঘাইড় (Giant Devil Catfish) |
দানব বাঘাইড় বা বাঘাইর ইংরেজী নাম The Goonch or Giant Devil Catfish এরা মিঠা পানির গভীর জলের মাছ। দক্ষিণ এশিয়ায় প্রাপ্ত একটি বিশালাকারের বাগারিয়াস গণের মাছের প্রজাতি যার বৈজ্ঞানিক নাম: Bagarius yarrelli. এরা Chordata পর্বের Sisoridae পরিবারের সদস্য। দানব বাঘাইড় নদীর পানির বাস্তুতন্ত্রের সর্বোচ্ছ শ্রেনীর খাদক।
এদের শ্রেনীবিন্যাস নিম্নরূপ-
Kingdom: Animalia
Phylum: Chordata
Class: Actinopterygii
Order: Siluriformes
Family: Sisoridae
Genus: Bagarius
Species: B. yarrelli
দক্ষিত এশিয়ার বড় বড় প্রবাহমান নদীগুলোতে এদের দেখতে পাওয়া যায়। বিশেষ করে ভারত উপমহাদেশের বৃহত নদীগুলিতে। এর মূলত দ্রুত প্রবাহিত নদী অর্থ্যাৎ ভারত উপমহাদেশের যেসব নদীতে পানির স্রোত অত্যাধিক থাকে সেইসব নদীর গভীর অংশে এরা বাস করে। খুব কম সময়ই এদের স্থির পানির নদীতে কিংবা কম গভীর পানিতে এদের দেখতে পাওয়া যায়।
এদের চোয়ালের বড় বড় দাঁত, আকর্ষণীয় মুখের গঠন এবং লম্বা শরীর ও শরীরের রং এর জন্য এটিকে দেখতে সত্যিকারেই দানবের মতো মনে হয়। শরীরে গঠন ও ভিন্ন রং এর কারনে এরা পানির গভীর অংশে বড় বড় পাথরের আড়ালে সহজেই নিজেদের লুকিয়ে রাখতে পারে। পাথরের আড়ালে এরা শিকারের জন্য অপেক্ষা করে এবং শিকার করার উপযোগী মাছ ও অন্যান্য জলজ প্রানী শিকার করে জীবন নির্বাহ করে।
দানব বাঘাইড়গুলো লম্বায় প্রায় সাড়ে ছয় ফুট পর্যন্ত হতে পারে। এদের ওজন প্রায় ২০০ পাউন্ডেরও অধিক হতে পারে। যা Siluriformes গনের অর্ন্তগত অন্যান্য সদস্যের তুলনায় অনেক বেশী। ক্যাটফিশদের মধ্যে এরা অন্যতম বৃহৎ আকারের হয় বলে এদের দানব বাঘাইড় বলা হয়।
যদিও ভারতীয় উপমহাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এদের ভিন্ন ভিন্ন নামে ডাকে। বাংলাদেশে এদের দানব বাঘাইড় নামেই ডাকা হয়। অপরদিকে হিন্দি ও পাঞ্জাবিতে গুন্ডা, বাঘার বা বাঘাই বাঙ্গারি এবং বিহারি নামে পরিচিত। এছাড়ও রাজস্থানে গাঁ, এবং ছত্তিশগড়িতে বোধ নামে পরিচিত। তবে বেশীর ভাগ অঞ্চলেই এদের গণের নাম অনুসারে নাম রাখা হয়েছে।
বাংলাদেশের ২০১২ সালের বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনের তফসিল ২ অনুযায়ী এ প্রজাতিটি সংরক্ষিত। যদিও এদের উপস্থিতি এখনো প্রচুর আছে তারপরেও বিভিন্ন নদীর স্রোতের উপর জল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মান এদের স্বাভাবিক জীবনের উপর প্রভাব ফেলছে। এছাড়াও নদীর পানি দূষন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে শুকনো সময়ে নদীর পানি কমে যাওয়া, নাব্যতা সৃষ্টির ফলে এই মাছগুলোর প্রজননে বিঘ্ন ঘটছে। যা আগামীতে এদের টিকে থাকার জন্য হুমকি হতেও পারে।